কলকাতা – সংখ্যা লঘুরা কি রাজ্যের শাসক দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে । সাঘরদিঘির উপনির্বাচনের ফলাফলে সে ইঙ্গিত বেশ স্পষ্ট । তার ওপর কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন । এই অবস্থায় কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নন তৃণমূল সুপ্রিমও তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এমনিতে নির্বাচনে ভরাডুবির পর গো হারা হারের কারণ খুঁজতে চুল চেরা বিশ্লেষণে মন দিয়েছেন তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব । তবে পরিস্থিতি যে বেশ উদ্বেগ জনক তা বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের একাধিক নেতার বাক্যবানে ।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আসল ভোট ব্যাংকের চাবি কাঠি লুকিয়ে রয়েছে রাজ্যের অগনিত মহিলা থেকে শুরু করে সংখ্যা লঘু মানুষের ভোটে । তাই এবার মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সংখ্যা লঘু ভোট ব্যাংক – কে কাছে টানতে বর সিদ্ধান্ত নিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই । সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে রাজ্যে কয়েক হাজার মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার । শুধুই কি মাদ্রাসা শিক্ষক এর সঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েত – কৃষি – সমবায় – পুলিশ প্রশাসন মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার শূন্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে রাজ্য প্রশাসন সুত্রে ।
তবে সব কিছুর পিছনেই রয়েছে রাজ্য সরকারের একাধিক দফতরের সিমাহীন দুর্নীতি প্রসঙ্গ । বিশেষ করে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় যেমন শিক্ষক নিয়োগ কাণ্ডে লাগামহীন দুর্নীতি কাণ্ডে তৃণমূল সরকারের একেবারে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় । দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী থেকে শুরু করে গোটা রাজ্যের শিক্ষা দফতরটাই যখন জেলের ঘানী টানছে ঠিক সেই সময় রাজ্য সরকারের এই নিয়োগের সিদ্ধান্তে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রাজ্যের বিরোধী দল থেকে শুরু করে চাকরি প্রার্থীরা ।
কিন্তু দুর্নীতি হোক কিংবা ষড়যন্ত্র , নিয়োগের বিষয়ে এবার অতি সতর্ক মমতা সরকার । এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসন সুত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী , এবার এই শূন্য পদ গুলি নিয়োগের ক্ষেত্রে কড়া দৃষ্টি রাখছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই । কিন্তু পরিস্থিতি যাই হোক স্বচ্ছ এবং দুর্নীতি মুক্ত নিয়োগই যে রাজ্য সরকারের পুরনো জমি ফেরাতে অনেকটাই সহায়ক ভুমিকা নেবে তা বুঝেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই । তাই সব কিছুকেই এবার বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং । এত কিছুর পরও নিয়োগ চাই । চাকরি প্রার্থীদের দাবি একটাই । স্বভাবতই রাজ্য সরকারের এই তিন হাজার শূন্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্তে বেশ খুশি রাজ্যের চাকরি প্রার্থীরা ।
তাহলে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন কোন দফতরে শূন্য পদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে –
সোমবার রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতরে রাজ্যে একাধিক মন্ত্রীদের নিয়ে এক গুরুত্ব পূর্ণ বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী । সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে , সরকারী ভাবে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী , প্রায় তিন হাজার পদে নিয়োগের প্রস্তাবে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। এবং ওই সব নিয়োগ-প্রস্তাবের অধিকাংশই মাদ্রাসা শিক্ষকের পদে। বাকিগুলি অন্যান্য দফতরে। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ১৭২৯ জন সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মাদ্রাসা শিক্ষক ছাড়াও ৭২৮ জন গ্রন্থাগারিক নিয়োগের প্রস্তাবে এ দিন সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা।
পাশাপাশি পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার একলব্য মডেল স্কুলের বিভিন্ন পদে ৭৪ জনকে নিয়োগ করা হবে। ঝাড়গ্রামে মাওবাদীদের হাতে আক্রান্ত পরিবারগুলির ২২ জনকে হোমগার্ড এবং দু’জন প্রাক্তন কেএলও সদস্যকেও হোমগার্ডের পদে চাকরি দেওয়ার ছাড়পত্র মিলেছে এ দিন। কৃষি দফতরে ১২২টি নতুন পদ সৃষ্টি করবে রাজ্য। কালিম্পং এবং ঝাড়গ্রামে সমবায় দফতরের বিভিন্ন পদে ৪৪ জনকে নিয়োগ করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে ।
written by – Somnath Pal .
আরও নতুন খবর পড়ুন : এখানে ক্লিক করুন
আমাদের টেলিগ্রাম (Telegram) চ্যানেলে যুক্ত হন : এখানে ক্লিক করে
TAG – #RECRUITMENT #WB #GOVT #MAMTA BANERJEE #MADRASA SERVICE COMMISSION #EDUCATON #POLICE #LIBRARIAN