গ্যারান্টার ছাড়াই 10 লক্ষ ঋণ দিচ্ছে সরকার, কীভাবে পাবেন? আসুন জেনে নেওয়া যাক -Govt Loan Scheme

এমনিতে কয়েক বছর  যাবত সরকারি চাকরির পাশাপাশি বেসরকারি চাকরির বাজারের হাল বেশ শোচনীয়। রুগ্ন অর্থনীতির কারণে ইতিমধ্যেই গত দুবছরে গোটা পৃথিবী জুড়ে কাজ হারিয়েছেন কয়েক কোটি মানুষ। এই তালিকায় বাদ যায়নি আমাদের দেশও ।  কিন্তু জীবন জীবিকা বলে কথা। তাই জিবিকার খোঁজে সরকারি কিংবা আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত বেসরকারি চাকরির বাজারে না ঘুরে কর্মহীন বেকার যুবক- যুবতীরা বিকল্প কাজ হিসাবে ব্যবসাকেই বেছে নিতে চাইছেন। কিন্তু পকেটে পর্যাপ্ত টাকা নেই। কিন্তু ব্যবসা করতে গেলে টাকা অর্থাৎ মুলধনের প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হল ব্যবসার সেই মূলধন অর্থাৎ টাকা জোগাবে কে। কিন্তু ব্যবসা করতে চাইলে ব্যবসা শুরু করা যেতেই পারে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে বিশেষ করে দেশের লাগামহীন বেকারত্ব দূরীকরণে ইতিমধ্যেই কয়েক বছর আগেই চালু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা (Pradhan Mantri Mudra Yojna) যোজনা প্রকল্পে ঋণের ব্যবস্থা। তাই অযথা চিন্তা না করে কেউ যদি ভাবছেন ছোটোখাটো ব্যবসা শুরু করবেন তাহলে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। Govt Loan Scheme 

এই প্রকল্পটি আদতে দেশের বেকারদের কর্ম সংস্থান এবং ব্যবসার মূলধন জোগান দিতেই চালু করা হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। তবে এই প্রকল্পের সম্পর্কে দেশের বেশির ভাগ মানুষই অবগত নন। তাই আজ আমরা আপনাদের এই মুদ্রা যোজনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। যেখানে আবেদন করলে ব্যবসার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ হিসাবে পেতে পারেন যে কোনও উদ্যোগী। তাহলে নিম্নলিখিত প্রতিবেদনটি খুঁটিয়ে পড়ে নিন চটপট । আর আজ থেকেই নতুন উদ্যোগের জন্য পরিকল্পনা শুরু করুন। 

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার লোণ (Mudra Yojna Loan)  অর্থাৎ ঋণ কারা পেতে পারেন ? 

এ বিষয়ে প্রথমেই যে বিষয়টি মনে রাখা দরকার সেটি হল, শুধুমাত্র নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রেই নয়, যদি কোনও উদ্যোগী বা ব্যবসাদার তার ব্যবসাকে বাড়াতে বা ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি করতে চান তারাও এই মুদ্রা যোজনার ঋণ সহজেই পেতে পারেন। তবে নতুন ব্যবসা হোক কিংবা পুরনো ব্যবসার সম্প্রসারণ দুই ক্ষেত্রে উদ্যোগীকে তার ব্যবসার সঠিক পরিকল্পনা বা লক্ষ্য ঠিক করে সেই পরিকল্পনার কাগজ পত্র সঠিক জায়গায় সঠিক ভাবে আবেদন করতে হবে। তবেই ওই ব্যক্তি ঋণ পাবেন মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই। কিন্ত ঋণ  বা লোণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে কোনও বাড়তি প্রসেসিং চার্জ দিতে হবে না। শুধুমাত্র ওই ব্যক্তি কি ধরণের ব্যবসা করতে চাইছেন সেই বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। তার সঙ্গে আবেদন পত্র যেন সঠিক ভাবে পূরণ করা হয় সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। 

মুদ্রা যোজনায় আবেদন করতে হলে  কি করতে হবে ? 

১) আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।

২) আবেদনাকারীর বয়স হতে হবে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে 

৩) এক্ষেত্রে সরকারি অথবা সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন বেসরকারি ব্যাঙ্ক মারফৎ সহজ কিস্তিতে লোণ পাওয়া যাবে।

কোন ধরণের ব্যবসার ক্ষেত্রে লোণ দেওয়া হয় ?

এক্ষেত্রে আবেদনকারী যদি ছোটোখাটো উৎপাদন ভিত্তিক কারখানা করতে চাইছেন তাহলে তিনি লোণ পাওয়ার যোগ্য । এ ছাড়াও মুদি দ্রব্য, মাছের ব্যবসা, সব্জির ব্যবসা, ঔষধের দোকান সেলুন, জিম, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, জামা কাপড়ের ব্যবসা , টেলারিং, কৃষিকাজ, পশুপালন যেমন- মাছের চাষ, পোলট্রি হ্যাচারি, ডেয়ারি ফার্ম, মৌমাছি পালন ইত্যাদি। 

তবে এ বিষয়ে ঋণ অর্থাৎ লোণের জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি আর্থিক সংস্থা থেকে তার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পত্র টিকে মনোনয়ন করে নিতে হবে। অর্থাৎ ব্যবসার যাবতীয় তথ্য দিয়ে সেটিকে আর্থিক সংস্থার থেকে মনোনীত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ প্রোজেক্ট টি একটি আর্থিক সংস্থার তত্বাবধানে তৈরি করতে হবে। 

কিভাবে আবেদন করতে হবে ? 

এক্ষেত্রে প্রথমেই আবেদনকারীকে ভারত সরকারের মুদ্রা যোজনা প্রকল্পের ওয়েব সাইটে (https://portal.udyamimitra.in) ঢুকে আবেদন পত্র ডাউন লোড করে নিতে হবে। তারপর ওই আবেদন পত্রে আবেদনকারীকে তার এবং তার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পত্রের যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হবে। তারপর ওই আবেদন পত্রটি সাবমিট করে তার একটি প্রিন্ট কপি অবশ্যই আবেদনাকারীকে তুলে নিতে হবে নিজের কাছে রাখার জন্য।

আবেদনের সময় আবেদনকারীকে নিম্ন লিখিত ডকুমেন্টস গুলি সঙ্গে রাখতে হবে :

১. আঁধার কার্ড ও ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ড 

২. আবেদনকারীর স্থায়ী বাসস্থানের ঠিকানা

৩. ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পত্র অর্থাৎ আবেদনকারী কি ধরণের ব্যবসা করতে চাইছেন তার প্রমান পত্র

৪. আবেদনকারীর ইনকাম ট্যাক্সের তিন বছরের খতিয়ান

৫. আবেদনকারীর যদি আগে থেকেই ব্যবসা থেকে থাকে তবে সেই ব্যবসার তিন বছরের ব্যালান্সশীট ইত্যাদি

এ প্রসঙ্গে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখা দরকার সেটি হল , মুদ্রা যোজনার এই লোণ ব্যবস্থাকে ক্ষুদ্র, মাঝারি, এবং বৃহৎ আকারে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন, 

১) ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত, 

২) মাঝারি ক্ষেত্রে দেওয়া হবে ৫০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা, এবং 

৩) বৃহৎ অঙ্কের ক্ষেত্রে  ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে ঋণ দানকারী ব্যাঙ্ক এবং আবেদনকারীর ব্যবসার ধরণ ও পরিমানের ওপর নির্ভর করবে। 

তবে ইতিমধ্যেই গোটা দেশের সব রাজ্যেই এই প্রকল্প পুরোমাত্রায় চালু হয়েছে। প্রকল্পটির সুবিধাও নিয়েছেন দেশের বেকার যুবক- যুবতী থেকে শুরু করে ছোটোখাটো উদ্যোগপতি ব্যবসাদারগণ । তাই অযথা সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির পিছনে শুধু সময় ব্যয় না করে আজ থেকেই প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার আওতায় ঋণ নিয়ে দেশের বেকার যুবক – যুবতীদের ছোটোখাটো ব্যবসা শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 

written by – Somnath Pal. 

Join Telegram Channel : Click Here

TAG- #BUSINESS #SELF ELPLOYMENT #PMMY #LOAN #BANK #MUDRA YOJNA

Leave a Comment