কলকাতা – রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত , সব দিকেই শূন্যতার ছবি । শুক্রবার গোটা রাজ্যের সরকারি অফিস থেকে শুরু করে স্কুল গুলির অবস্থা এমনটাই । প্রায় প্রতি জায়গাতেই ধরা পড়ল কর্মী শূন্যতার স্পষ্ট চিত্র । সরকারি নির্দেশ কে উপেক্ষা করে DA -র দাবিতে ১০ই মার্চ অর্থাৎ শুক্রবার গোটা রাজ্যের সরকারি অফিস গুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আন্দোলনরত রাজ্য সরকারি কর্মীরা ।
তবে আন্দোলনের নামে কোনও রকম ধর্মঘট যে রাজ্য সরকার বরদাস্ত করবে না তার ইঙ্গিত মিলেছে গত বৃহস্পতিবার শেষ লগ্নেই । এ নিয়ে রাজ্য সরকারী কর্মীদের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার কড়া নির্দেশিকা জারি করে অবস্থান স্পষ্ট করে রাজ্য সরকার । ওইদিন রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্ন – তরফ থেকে ওই নোটিশ জারি করা হয় । জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয় , ১০ মার্চ অর্থাৎ শুক্রবার যদি কোনও সরকারি কর্মী তার কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকেন তাহলে ওই কর্মীর চাকরি জীবনে এক দিনের ছেদ পড়বে অর্থাৎ ওই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে ব্রেক ইন সার্ভিস রুল জারি করা হবে পাশাপাশি ওই কর্মীর এক দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে । এমনকি শুক্রবার অর্থাৎ ১০ই মার্চ কোনও রাজ্য সরকারি কর্মচারীকে প্রথম ভাগ বা দ্বিতীয় ভাগ বা পূর্ণদিবস ছুটি দেওয়া হবে না। নেওয়া যাবে না ‘ক্যাজুলয়াল লিভ’ বা অন্য কোনও ধরনের ছুটিও ।
এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে কড়া নির্দেশিকার পাশাপাশি শুক্রবার সকাল থেকেই এক নয়া ফর্মুলা জারি করল নবান্ন । কি সেই নয়া ফর্মুলা ?
আসলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ধর্মঘট কে বানচাল করতেই এই নয়া উদ্যোগ বলে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । এদিন জেলায় জেলায় জেলা শাসক থেকে শুরু করে খোদ কলকাতা মহানগরীর অফিস গুলিতে সরকারি কর্মীদের হাজিরা নিয়ে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয় নবান্ন মারফৎ । ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয় ঘড়ির কাঁটা অর্থাৎ সময় উল্লেখ করে রাজ্যের সমস্ত সরকারি অফিসে কর্মীদের হাজিরা অর্থাৎ উপস্থিতির রিপোর্ট পাঠাতে হবে নবান্নে । তবে এই উপস্থিতি অর্থাৎ হাজিরার রিপোর্ট যে শুধু একবার পাঠাতে হবে তাই নয় , সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু করে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত পর্যন্ত চারবার কর্মীদের হাজিরা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । সব দফতরের প্রধান এবং সব জেলাশাসকদের উদ্দেশ্যে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ চারবার কর্মীদের অনুপস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠাতে হবে। কোনও সরকারি কর্মচারী কেন অনুপস্থিত আছেন, তাও জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে ।
কিন্তু বেতন কেটে নেওয়াই হোক কিংবা চাকরি জীবনে ছেদ , একেবারে শুরুর দিন থেকেই রাজ্য সরকারের এই কড়া অবস্থান কে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য সরকারি কর্মীরা । পাল্টা ডিএ নিয়ে আন্দোলন – ধর্মঘটের সিদ্ধান্তেই অনড় রাজ্য সরকারি কর্মীরা । এনিয়ে রাজ্য সরকারের মনোভাব প্রকাশ্যে আসতেই পাল্টা আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের তরফে হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে । আসলে যত দিন যাচ্ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংঘাতের আবহ ।
এ বিষয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে , আসলে রাজ্য সরকার কর্মীদের আন্দোলন কে বানচাল করতে চাইছে । এমনিতে ১০ টা ৪৫ মিনিটের পর কেউ অফিসে আসলে তাকে অনুপস্থিত হিসাবে ধরে নেওয়া হয় । এবার ক্ষণে ক্ষণে উপস্থিত এবং অনুপস্থিতির রিপোর্ট তলব করে রাজ্য সরকার কর্মীদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসে অফিস গুলিতে কর্মী শূন্যতার আসল ছবিকে ধামা চাপা দিতে চাইছে । কিন্তু এসব করে যে আসল সত্য কে রাজ্য সরকার চাপা দিতে পারবে না সে কথাও এদিন স্পষ্ট করা হয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে । তবে দিনের শেষে আসল ছবি কি উঠে আসে তার উত্তর মিলবে সংগ্রহ করা সরকারি রিপোর্টের পরেই ।
written by – Somnath Pal.
More Job News : Click Here
Join Telegram Channel : Click Here
TAG – #DA #GOVT #SALARY #DEARNESS ALLOWANCE #WB #MOVEMENT #STRIKE #WB GOVT