রাজ্য তথা কেন্দ্র সরকারের নানা ধরনের চাকরির খবর সঙ্গে রাজ্য তথা কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, সরকারি ঘোষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত আরও বহু আপডেট পেতে বঙ্গধারার WhatsApp Group অথবা Telegram Channel এ যুক্ত হয়ে যান।
কলকাতা : লক্ষ্মীর ভাণ্ডার , স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের টাকা জোগাতেই বছর ভর চলে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা , এর মধ্যেই রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক স্বপ্নের প্রকল্প। টাকা আসবে কথা থেকে ? মাত্র কয়েকমাস আগেই জেলা ভিত্তিক প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝে রাজ্যের একাধিক প্রকল্প নিয়ে এমনই আক্ষেপের শুর শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর গলায় । এর মধ্যেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA যে রাজ্য সরকারের কাছে গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মতো তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা । কিন্তু হাজার দেওউলিয়াপনা থাকা স্বত্ত্বেও রাজ্যের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ৭০ টির ওপর জনমুখি প্রকল্প চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই সব প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়নের জন্য প্রতি বছর নিয়ম করে সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা । এই সব প্রকল্পের মধ্যে সব চাইতে বড় অঙ্কের খরচের বহর চলছে গ্রাম বাংলার মায়েদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (LAKSMIR BHANDAR ) ।
আসলে সবের পিছনে রয়েছে তৃণমূল সরকারের স্বস্তা জনমোহিনী ভোট রাজনীতি, বিরোধীদের অভিযোগ এমনটাই । তবু বিরোধীদের কোনও কটাক্ষ কে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এর কারণ টা অবশ্য বেশ স্পষ্ট । কারণ রাজ্যের মহিলারাই যে মুখ্যমন্ত্রীর আসল চালিকা শক্তি পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের আসল ভোট ব্যাঙ্ক তা বলাই বাহুল্য । তাই অর্থনৈতিক হাল শোচনীয় হলেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর তৃণমূল সরকার । কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA -র কি হবে ?
এমনিতে মামলা ঝুলছে সুপ্রিম কোর্টের দরজায় । কবে সুরাহা হবে তা নিয়ে সংশয়ের অন্ত নেই । কবে ঘুম ভাঙ্গবে রাজ্য সরকারের । কবে বকেয়া DA মিলবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকারি কর্মী মহল । এরই মধ্যে ইঙ্গিত পূর্ণ মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । ইতিমধ্যেই শুভেন্দুর ফেস বুক পোস্ট ঘিরে গোটা রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা । কিন্তু কি সেই মন্তব্য যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় গোটা সোশ্যাল মিডিয়া ।
জানা গিয়েছে মাত্র দু দিন আগেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তাঁর ফেস বুক পোস্টে লিখেছেন , এবার হয়তো রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA দেবে রাজ্য সরকার । আর শুভেন্দুর এই ইঙ্গিত পূর্ণ মিন্তব্যের পরেই তৈরি হয়েছে জোর আলোচনা । এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত , আগামী ১৬ ই জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে DA মামলার শুনানি । ওই মামলার রায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষে যাবে বলে অনুমান করেই এমন মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা । তবে শেষ পর্যন্ত মামলার রায়ে কি ফলাফল হয় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১৬ই জানুয়ারি পর্যন্ত ।
তবে ইতিওধ্যেই এক ধাপ এগিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য ১২ শতাংশ DA ঘোষণা করেছেন । এর জন্য ত্রিপুরা সরকারের খরচ হবে ১৪৪০ কোটি টাকা । এই বাড়তি ডিএ ঘোষণার পরই ত্রিপুরার রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ -এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশে । পরিসংসংখ্যান বলছে এই বাড়তি ডি এ -র সুবিধা পাবেন ওই রাজ্যের ১ লক্ষ সরকারি কর্মচারী প্রায় আশি হাজার পেনশন ভোগী । কিন্তু ত্রিপুরা সরকার তাদের কর্মীদের বিষয়ে সদর্থক ভুমিকা নিলেও এ রাজ্যের ক্ষেত্রে সরকারি সরকারি কর্মীরা যে সরকারের নেক নজরে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা ।
কিন্তু সরকার যাই বলুক রাজ্য সরকারি কর্মীরা অবশ্য তাদের ন্যায্য পাওনার বিষয়ে হাল ছাড়তে নারাজ । বকেয়া ডিএ -র দাবিতে আদালতের দরজায় কড়া নেড়েও লাভ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পথে নেমে আন্দোলনের পাশাপাশি বিধানসভা অভিযানের ডাক দেয় রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা । তা নিয়ে অবশ্য ঘটনার ঘনঘটা কম হয়নি । পুলিশের সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের তুমুল ধ্বস্তাধস্তির সাক্ষী হয়েছে মহানগরী । পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আন্দোলনের আক্ষা দিয়ে নয় নয় করে প্রায় ৪৬ জন রাজ্য সরকারি কর্মীকে গ্রেফতার পর্যন্ত হতে হয়েছে । পরে অবশ্য আদালতের নির্দেশে গ্রেফতার হওয়া কর্মীরা ছাড়া পান পুলিশি হেফাজত থেকে । এ নিয়ে রাজ্যের শাসক থেকে বিরোধী রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত ।
এরইমধ্যে রাজ্যের আর্থিক ভাঁড়ারের শূন্যতা নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কণ্ঠে যেমন শোনা গিয়েছে তীব্র কটাক্ষের শুর তেমনই রাজ্যের আর্থিক ভাঁড়ারের শূন্যতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় প্রতি মুহূর্তে শোনা গিয়েছে আক্ষেপের সুর । কিন্তু তা বললে তো চলবে না । সরকারি কর্মীদের ডি এ-র দাবি যে যুক্তি সঙ্গত সে কথা স্পষ্ট করেছে কলকাতা হাইকোর্ট । কিন্তু রাজ্যের আর্থিক ভাঁড়ারের অবস্থা ভাঁড়ে মা ভবানী। এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা যে একেবারে খাদের কিনারায় তা স্পষ্ট করেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব স্বয়ং ।
আসলে খেলা, মেলা আর উৎসব। তার ওপর অযথা দান খয়রাতী। এই করেই সব টাকা শেষ। বিরোধীদের অভিযোগ অবশ্য এমনটাই। এমনিতে রাজ্যের কোষাগারের অবস্থা ভাঁড়ে মা ভবানী, তারওপর ভোট রাজনীতির স্বার্থে একের পর এক প্রকল্প। আর তাতেই একেবারে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। রাজ্যের আর্থিক ভাঁড়ার যে ক্রমশ দৈনতার দিকে ধাবমান তা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট। তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই হাঁটে হাঁড়ি ভেঙ্গেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এক কদম এগিয়ে দাবি করেন, ডিএ তো দুরস্ত, সরকারি কর্মীদের ডিসেম্বর মাসের মাইনে সরকার দিতে পারবেনা তা নিয়ে আগাম ভবিষৎবাণী করেন তিনি।
তবে শুধু বিরোধী দলগুলিই নয়, গত সেপ্টেম্বর মাসে এক অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে টাকার জন্য চিন্তায় রাতের ঘুম উধাওয়ের কথা শুনিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং । তার পরেও রাজ্যের পুজো কমিটি গুলিকে আর্থিক অনুদান দিতে রাজ্যের কোষাগার থেকে চলে গিয়েছে ২৫৮ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর এই দান খয়রাতীর রাজনীতিকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজ্যের বিরোধী দল গুলি। এ নিয়ে মামলা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তার নিজের সিদ্ধান্তেই অবিচল। শেষ পর্যন্ত পার হয়েছে পুজো।
কিন্তু এবার কি সত্যিই DA পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা ? ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA নিয়ে হাইকোর্টে ঝাড়ি খেয়েছে রাজ্য সরকার। চলতি বছরের মে মাসে ডি এ মামলায় রাজ্য সরকার কে তিন মাসের মধ্যে কর্মীদের বকেয়া ডিএ অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই রায়ের পরই পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার। তাতেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি। রাজ্য সরকারের রিভিউ পিটিশন খারিজ করে ২২ মের রায়ই বহাল রাখে হাইকোর্ট।
শেষ পর্যন্ত বকেয়া ডি এ না পেয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন রাজ্যের একাধিক কর্মচারী সংগঠন। সেই মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেইমতো সরকারের তরফে আদালতে হলফনামা পেশ করা হয়। সেইসঙ্গে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের যুক্তি হাইকোর্টের নির্দেশ মতো রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে গেলে ভয়াবহ আর্থিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। সেই পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হতে পারে, তা কল্পনাতীত বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে।
কিন্তু দেউলিয়াপনা থাকা স্বত্ত্বেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আসছে কথা থেকে ? এ বিষয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ শুধু মাত্র রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডি এ -য়েই নয় । কেন্দ্র সরকারের একশো দিনের টাকাও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো স্বস্তা জন মোহিনী প্রকল্পে দেদার খরচ করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার । এই অবস্থায় রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিম রায়ে যদি রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত কর্মীদের বকায়ে DA দিতে হয়ে তাহলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্প যে জাহার নামে চলে যাবে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এ রাজ্যের সরকার । এ বিষয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের অভিযোগ , ২০১৫ সাল থেকে কর্মীদের ডি এ বকেয়া রয়েছে । প্রতিবছর যদি সরকার নিয়ম করে বর্ধিত ডি এ -এর টাকা মিটিয়ে দিত তাহলে সরকারের ওপর এককালীন অর্থনৈতিক বোঝা অনেকটাই কম হতো । কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডি এ- এর বিষয়ে একেবারে শুরু থেকেই বেশ উদাসীন এ রাজ্যের সরকার । পাশাপাশি একাধি কর্মচারী সংগঠনের আরও দাবি , যদি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা সরকার পারে তাহলে এ রাজ্যের সরকার তাদের কর্মীদের বিষয়ে এতো উদাসীন কেন ? এ বিষয়ে রাজ্যের বিরোধী শিবির থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারী কর্মচারী সংথনের অভিযোগ , খেলা- মেলা আর উৎসব করেই এ রাজ্যের সরকার সব টাকা শেষ করে দিচ্ছে । সেই কারণেই রাজ্যের আর্থিক ভাঁড়ারের অবস্থা ক্রমশ শোচনীয় তা বলাই বাহুল্য । তবে শেষ পর্যন্ত কি হয় তা নির্ভর করবে আগামী ১৬ই জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিম রায়ে । সুপ্রিম কোর্টের রায় যদি রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষে যায় তাহলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডি এ -এর বিষয়ে রাজ্য সরকার কে যে বেশ বেকায়দায় পড়তে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা । এমনকি এর কারণে অবসান হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প তথা ভোট রাজনীতির প্রধান চালিকা শক্তি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো স্বস্তা জন মোহিনী প্রকল্পের ।
written by – Somnath Pal.
রাজ্য তথা কেন্দ্র সরকারের নানা ধরনের চাকরির খবর সঙ্গে রাজ্য তথা কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, সরকারি ঘোষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত আরও বহু আপডেট পেতে বঙ্গধারার WhatsApp Group অথবা Telegram Channel এ যুক্ত হয়ে যান।
For More Job News: Click Here
Join Our Telegram Channel : Click
TAG – #DA #HIGHCOURT #GOVT #WB #SALARY #MAMTA #SHUBHENDU #DEARNESS ALLOWANCE #LAKHSMIR BHANDAR