নন্দীগ্রাম কিংবা নয়াচর , বঙ্গ রাজনিতির বহু চর্চিত নাম । ফের একবার আলোচনায় নন্দীগ্রাম কিংবা নয়াচর । আর হবে নাই বা কেন । দিন কয়েক আগেই মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এক ধাক্কায় দশ হাজার কর্ম সংস্থানের লম্বা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং । শুধুই কি প্রতিশ্রুতি এ বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে কিভাবে ওই কর্ম সংস্থান সৃষ্টি করা হবে তারও সু- নির্দিষ্ট পথ বাতলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই মেদিনীপুরজেলার নয়াচরের বিশাল জলাশয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে উন্নত এবং সু-সংহত মৎস্য অর্থাৎ মাছ চাষ । মূলত মৎস্য চাষের মাধ্যমেই ওই কর্ম সংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । WB Govt Job Recruitment
দিন কয়েক আগেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নয়াচর কে কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তোলা হবে । এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন কে কয়েক দফা নির্দেশ ও দিয়েছেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই জমি লিজ দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়া শুরু করা হবে । বিশেষত নয়াচরের মাটিতে প্রায় আট হাজার একর জায়গা জুড়ে রয়েছে ছোট বড় সাড়ে সাত হাজার জলাশয় । এই জলাশয় গুলি লিজ দিয়ে সেখানে উন্নত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফেরইমাছ চাষে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার । আর এই মাছ চাষের মাধ্যমেই নয়া চরের মাটিতে তৈরি হবে ব্যপক কর্ম সংস্থান ।
এ বিষয়ে সরকারি সুত্রে জানা গিয়েছে , ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার । সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে নয়াচরের বিশাল বিশাল জলায়শয় গুলির মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ একর মিলিয়ে তৈরি হবে এক একটি ইউনিট । ওই ইউনিট গুলিতে সু-সংহত উপায়ে তৈরি হবে মৎস্য চাষ কেন্দ্র । এ বিষয়ে পরিবেশ বান্ধব শিল্পের কথা মাথেয় রেখে মূলত জোর দেওয়া হয়েছে চিরা চরিত মৎস্য চাষ প্রকল্পে । প্রতমে ওই ইউনিট গুলি লিজ দেওয়া হবে । এরপর লিজ দেওয়া জলাশয় গুলিতে মাছ চাষ করে সেই মাছ বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্য মাত্রা নেওয়া হয়েছে । আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই নয়াচর কে উন্নত ও সু- সং হত মৎস্য চাষের অন্য তম কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্য মাত্রা নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারি উদ্যোগে ।
বর্তমানে ওই এলাকায় বহু মৎস্য চাষি একক এবং বিক্ষিপ্ত ভাবে মৎস্য চাষ করেন । এবার সেই সকল মৎস্য জীবী মানুষ কে একি ছাতার তলায় নিয়ে এসে সরকারি সাহায্যে আরও বৃহৎ আকারে এই এই মৎস্য চাষ শিল্প কে বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিম বঙ্গ সরকার । সেই লক্ষ্যে ইতি মধ্যেই ওই এলাকায় প্রায় ৮০ টির ওপর মৎস্য সমবায় বা কো- অপারেটিভ সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে সরকারি উদ্যোগে । এবার সেই সমবায় সংগঠন গুলিকে সামনে রেখেই জমি লিজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৃহৎ আকারে উন্নত এবং সু- সংহত মৎস্য চাষ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে । সমবায়ের পাশাপাশি যদি কোনও মৎস্য জীবী ব্যক্তিগত উদ্যোগে জমিলিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করতে চান তার জন্যও উপযুক্ত সুযোগ থাকছে বলে জানা গিয়েছে সরকারি সুত্রে। ফলে উন্নত এবং বৃহৎ আকারে মৎস্য চাষের ফলে যেমন ওই এলাকার মান উন্নয়ন হবে তেমনি বড় আকারে কর্ম সংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানান হয়েছে রাজ সরকারি তরফে ।
প্রসঙ্গত , একে তো করোনা মহামারী , তার ওপর লাগামহীন দুর্নীতি তার জেরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকারের একাধিক দফতর কর্মী শূন্যতায় ভুগছে । সব চাইতে জটিল অবস্থা রাজ্যের শিক্ষা দফতর নিয়ে । এর সঙ্গে দোসর খাদ্য দফতর থেকে শুরু করে দমকল বিভাগ আরও একাধিক দফতর । পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে রাজ্য সরকারের একাধিক দফতরের কাজ চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে । আসলে দুর্নীতির গেরো যেন রাজ্য সরকারের পিছু ছাড়ছে না । বর্তমানে অবস্থা এমন যেখানেই নিয়োগ সেখানেই দুর্নীতি । এরওপর গোটা দেশের পাশাপাশি রাজ্যে বেকারের সংখ্যার গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী । এই অবস্থায় কর্মী শূন্য দফতর চালাতে রাজ্য সরকারের যেমন অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে তেমনি বেকারের ঊর্ধ্বমুখি গ্রাফ কে নিচে নামানো রাজ্য সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ । পাশাপাশি নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন । তার ওপর কয়েক মাস বাদেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন । পাশাপাশি চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনে জেরবার রাজ্য সরকার । এই অবস্থায় বঙ্গের চাকরি প্রার্থীদের কাছে স্বচ্ছ নিয়োগই যে দুর্নীতির ক্ষত মেরামতের আসল চাবিকাঠি তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা । পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজী নয় রাজ্য সরকার । তাই এবার অতি সন্তর্পণে রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরে যেমন কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তেমনি রাজ্যের মৎস্য চাষ থেকে শুরু করে আম – কিংবা একাধিক কুতির শিল্প কে ঢাল করে ব্যাপক হারে কর্ম সংস্থানে জোর দিতে চাইছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শেষ পর্যন্ত নয়া চরের মাটিতে রাজ্য মুখমন্ত্রীর কর্ম সংস্থানের স্বপ্ন বাস্ত বায়ন হয় কি না তার উত্তর মিলবে আগামী কয়েক মাস পরেই । আপাতত সরকারি এই উদ্যোগে আশায় বুক বাঁধছেন নয়াচর থেকে শুরু করে মেদিনীপুর এলাকার অগনিত মৎস্য জীবী মানুষ থেকে শুরু করে হাজার হাজার কর্ম হীন মানুষ ।
written by – Somnath Pal .
★Join Telegram Channel : Click Here
★More Job News : Click Here
TAG – #WB #GOVT #NEW PRAKALPA #EMPLOYMENT #MAMTA BANERJEE #FISHERY PROJECT