কলকাতা : চাকরিতে ধরা বাঁধা মাস মাইনা। তার থেকে বরং ঢের ভালো ব্যবসা। তাও যদি নিজের হয় তা হলে তো আর কথায় নেই। মনের মতো করে পসার জমাতে পারলেই আর চিন্তা নেই । তখন শুধু টাকা আর টাকা। তবে ক্ষতিও ব্যবসার আর এক অঙ্গ। আসলে গত কয়েক বছর যাবত মহামারীর কারণে গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক হাল বেশ শোচনীয়। আর্থিক দৈনদশার কবলে পড়ে সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির বাজারের অবস্থাও বেশ করুন। এই অবস্থায় গোটা বিশ্বের পাশাপাশি দেশের বেকার যুবক- যুবতীরা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে ব্যাবসাকেই তাদের পছদের তালিকায় রেখেছেন সাম্প্রতিক সময়ে।
কিন্তু শধু পছন্দ হলেই তো হবে না । ব্যবসা করতে যেমন দরকার সঠিক পরিকল্পনা , উপযুক্ত শ্রম তেমনি দরকার পুঁজির। তার ওপর অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কোপে পড়ে অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়াটাও নেহাত চ্যালেঞ্জের বিষয়। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো এগলে স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা করে খুব অল্প দিনেই সাফল্যের সোপানে পোঁছানো সম্ভব।
তাই আজ আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী আপনাদের সামনে এমন কিছু স্বল্প পুঁজির লাভ জনক ব্যবসার কথা বলব যে ব্যবসাগুলি করলে যেকোনো বেকার যুবক -যুবতীরা সহজেই মাসে মাসে প্রচুর টাকা কামাতে পারবেন খুব সহজেই। তাহলে আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞরা স্বল্প পুঁজিতে ঠিক কোন ধরণের ব্যবসার কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের প্রথম বক্তব্য, প্রথমেই ব্যবসা শুরুর আগে যে বিষয়টির ওপর আপনাকে সবার আগে নজর দিতে হবে হল, বর্তমানে বাজারে কোন ধরণের জিনিসের চাহিদা রয়েছে প্রচুর পরিমানে। মোটের ওপর ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা শুরু করলে উপযুক্ত বাজার সহজেই আপনার সামনে ধরা দেবে চট জলদি। তাতে আপনার ব্যবসার ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে একেবারে শুরু থেকে। পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবসা শুরু করলে আপনার ব্যবসা চলবে গড়গড়িয়ে।
এ ক্ষেত্রে,
১) কোচিং বিজনেস বা ব্যবসা – বিশেষজ্ঞরা বলছেন সাম্প্রতিক সময়ে স্বল্প বা বিনা পুঁজিতে পড়াশোনার অঙ্গ হিসাবে কোচিং ব্যবসার জুড়ি মেলা ভার । কারণ এই ব্যবসাটির বর্তমান বাজারে চাহিদা প্রচুর । এতে মাসে মাসে মোটা টাকা কামিয়ে নেওয়া যায় সহজেই । তবে ব্যবসা টি করার আগে বেশ কয়েকটি বিষয় অবশ্যই আপনাকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা । কি বিষয় ? যেমন ধরুন ,
ক) আপনি কোথায় ব্যবসা করতে চাইছেন অর্থাৎ ব্যবসার স্থান বা জায়গা নির্বাচন – এক্ষেত্রে আপনাকে একটি উপযুক্ত মানের বা সাইজের ঘর দেখতে হবে ব্যবসাটি শুরু করতে হলে ।
খ) বিষয় নির্বাচন – এক্ষেত্রে আপনি নিজে অথবা আপনার আত্মীয় বা বন্ধু বান্ধব মহল থেকে সু কৌশলে বিশয় ভিত্তিক ভালো মানের শিক্ষক নির্বাচন করতে হবে ।
গ) কোচিং ফী নির্ধারণ – কোচিং ফী নিরধারনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে জথা সম্ভব অল্প পয়সার বিনিময়ে ছাত্র- ছাত্রীদের শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে ।
ঘ) কোচিং ক্লাসের সময় নির্বাচন – এক্ষেত্রে ছাত্র – ছাত্রী বা পড়ুয়াদের সুবিধা মতো কোচিং ক্লাসের সময় নির্বাচন অতি প্রয়োজনীয় বিষয় । সেটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ।
২) মুরগী পালন ব্যবসা – বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রায় প্রত্যেকটি মানুষের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় দিনের পর দিন বাড়ছে মুরগীর মাংসের চাহিদা । ফলে আপনার বাড়িতে যদি অল্প বিস্তর জায়গা থাকে তাহলে আপনি বারিতেই এই মুরগী পালনের ব্যবসা শুরু করতে পারেন । মাত্র কয়েকমাসের মধ্যেই এই ব্যবসার হাত ধরে আপনি সহজেই হয়ে উঠতে পারেন একজন আদর্শ কারবারি । ব্যবসাটিতে মাসে মাসে আপনাকে ভালোই ইনকাম দেবে । তবে ব্যবসা করার আগে আপনাকে অবশ্যি কিছু বিষয় মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা । দেখে নেওয়া যাক বিষয় গুলি ঠিক কি ?
ক) ব্যবসার স্থান বা জায়গা নির্বাচন – এক্ষেত্রে আপনাকে নিজের বাড়িতে অথবা কোন স্থান ভাড়া বা অল্প পয়সায় লিজ নিয়ে ব্যবসার আদর্শ জায়গা নির্বাচন করতে হবে ।
খ) মোরগ বা মুরগী নির্বাচন – চাশের জন্য বাজার ঘুঁটে ভালো জাতের মুরগী বা মোরগ নির্বাচন করতে হবে । যা চাষের উপযুক্ত ।
গ) মুরগীর খাবার – চাষ যোগ্য মোরগ বা মুরগীর খাবার আপনাকে অবশ্যই মজুত রাখতে হবে ।
ঘ) মোরগ বা মুরগীর রোগ ব্যাধি – মুরগী বা মরগের রোগ ব্যাধির জন্য পশু চিকিতসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাক্সিন এবং চিকিৎসা প্রয়োজন ।
ঙ) মোরগ বা মুরগীর প্রজনন বা বংশ বৃদ্ধি – এক্ষেত্রে যে বিষয়টি অবশ্যি মাথায় রাখতে হবে সেটি হল চাষ যোগ্য মোরগ বা মুরগির প্রজনন বা বংশ বৃদ্ধির বিষয়টি ।
৩) ধুপ কাঠির ব্যবসা – এই ব্যবসাটি স্বল্প পুজিতেই আপনি আপনার বাড়িতে শুরু করতে পারেন । এই বর্তমান বাজারে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এই বস্তুটির চাহিদা অপরিসীম । বহুকাল আগে থেকেই প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ধুপের ব্যবহার চলছে পুরোমাত্রায় । ব্যবসা টি শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয় গুলি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সেগুলি হল ,
ক) ধুপ কাঠি তৈরির কাঁচা মাল – এ ক্ষেত্রে ধুপ কাঠি তৈরি করতে যে উপকরণ গুলি প্রয়োজন যেমন , কাঠ-কয়লার গুঁড়ো, চন্দন গুড়ো , বাশের লাঠি, পারফিউম, জিগাত পাউডার , হোয়াইট চিপস পাউডার ,কাগজের বাক্স, ধুপকাঠি মোড়ানোর কাগজ, কুপাম ডাস্ট ইত্যাদি। এই সরঞ্জাম গুলি যে কোনও পাইকারি বাজার থেকে সহজেই পেয়ে যাবেন ।
খ) ধুপ কাঠি কিভাবে তৈরি করবেন – ধুপ কাঠি তৈরির জন্য আপনি ইউ টিউব ঘেঁটে নিতে পারেন । তাহলে খুব অল্প সময়ে আপনি ধুপ কাঠি তৈরি শিখে নিতে বা রপ্ত করতে পারবেন সহজেই ।
গ) ধুপ কাঠি তৈরির মেশিন – মুলত এই ব্যবসাতি করার জন্য তিন ধরণের মেশিনের প্রয়োজন । যেমন – ধুপ কাঠি তৈরির কাঁচামাল কে একত্রিত করণ – ধুপ কাঠি তৈরি -এবং ধুপ কাঠি তৈরির পর টা ভালো ভাবে শুকানো । বাজার থেকে সহজেই এই মেশিন গুলি আপনি জোগাড় করে নিতে পারবেন ।
ঘ) ট্রেড লাইসেন্স – এই ব্যবসাটি করার ক্ষেত্রে স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পুরসভা থেকে আপনি সহজেই ট্রেড লাইসেন্স পেয়ে যাবেন ।
written by – Somnath Pal.
আরও নতুন খবর পড়ুন : এখানে ক্লিক করুন
আমাদের টেলিগ্রাম (Telegram) চ্যানেলে যুক্ত হন : এখানে ক্লিক করে
TAG – #LOWCAPITAL #BUSINESS #INVESTMENT #NEW IDEA